দক্ষিণ পন্থী এবং বাম পন্থী


দক্ষিণপন্থী আর বামপন্থী রাজনীতির মধ্যে সবচেয়ে প্রকট পার্থক্য হলো দক্ষিণপন্থীরা বহিরাগত বনাম ভূমিপুত্র, এক সম্প্রদায় বনাম আরেক সম্প্রদায়, এক ধর্ম বনাম আরেক ধর্ম, এক জাত বনাম আরেক জাত, বিশুদ্ধ রক্ত বনাম মিশ্রিত রক্তের রাজনীতির কথা বলবে। অন্য দিকে বামপন্থীরা কেবল ধনী বনাম গরীবের রাজনীতির কথা বলবে। অর্থাৎ একটি হলো সমাজের অনুভূমিক পার্থক্যর রাজনীতি, অন্যটি হলো উল্লম্ব পার্থক্যের রাজনীতি। অনুভূমিক পার্থক্য গুলি আমাদের জন্মগত। তার ওপর আপনার নিজের কোনো হাত নেই। আপনি আজীবন লড়াই করলেও আপনার এই জন্মগত ছাপ পরিবর্তন করতে পারবেন না।

কিন্তু ধনী গরীবের লড়াই অধিকারের লড়াই। আপনি গরীব হয়ে জন্মে ও আপনার হকের দাবি ছিনিয়ে নিতে পারলে আপনি গরীব হয়ে মরবেন না, আপনার পরবর্তী প্রজন্ম ও পাবে ভাত, কাপড়, বসস্থান এর নিশ্চয়তা। যে সামাজিক ও আর্থিক নীতি একটি আদনি বা আম্বানির জন্ম দেয়, সেই একই পরিকাঠামো দু বেলা খেতে না পাওয়া কোটি কোটি বুভুক্ষ ভারতবাসীর জন্ম ও দিয়েছে। এই বৈষম্যের দায় অবশ্যই এই দেশের নীতি নির্ধারকদের। যে মধ্যবিত্ত এই দুই ভারতের জন্মের পেছনে মেধা'র কথা বলে, তারা আসলে স্বার্থপর এবং ধান্দাবাজ। পৃথিবীতে কোনো মানুষ তার মেধার জন্য গরীব থেকে বড়োলোক হতে পারলে ও মেধা না থাকার জন্য কেউ ধনী থেকে গরীব হয়নি, আবার গরীব মানুষরা ও মেধা না থাকার ফলে গরীব থেকে যায় না সারা জীবন। অন্যদিকে অর্থ থাকলে যে মেধা'র কোনো ভূমিকাই থাকে না, এই কথা মধ্যবিত্তরা কোনো দিন বলবেই না। তুমি গরীব কারণ তোমার মেধা নেই এই অজুহাত আসলে এক নির্লজ্জ মিথ্যাচার। পৃথিবীতে কোনো মানুষ মেধাহীন ভাবে জন্মাতে পারে না।

এই বিশাল বুভুক্ষ, মেহনতি, গরীব, চাকরী না পাওয়া ভারতবাসীর প্রাপ্য যে ধনীরা ছিনিয়ে নিয়ে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম মোচ্ছবে মেতে উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই।


ধনী এবং গরীব কে পৃথিবীর কোনো দার্শনিক কোন সম্প্রদায় হিসেবে আখ্যায়িত করেনি, স্থিতিশীল আইডেন্টিটি দিয়ে ও দাগিয়ে দেয়নি। যদি কেউ করে থাকে তবে বামপন্থীরা ও সাম্প্রদায়িক।


Written by rourab

09th January Sunday 2022



   Share  

Write A Comment