pseudo science confirms but Science disapproves
কি করে চিনবেন কোন বক্তব্য অবৈজ্ঞানিক বা ছদ্ম বিজ্ঞান? আপনার সামনে যদি কেউ কোনো অবৈজ্ঞানিক বা ছদ্ম বিজ্ঞানের দাবি রাখেন, তাকে আপনি কি করে যুক্তি দেবেন?
১) ধরুন আপনার সামনে কেউ দাবি করলো ভূত আছে, আত্মা আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আপনি যখন তার এই দাবি গুলি নস্যাৎ করতে গেলেন, তিনি আপনাকে বলে বসলেন আপনি প্রমাণ করুন তো ভূত নেই, আত্মা নেই। কার্ল সেগণের মতে একে বলা হয় 'shifting of burden of proof'। তিনি বলেন যে কোনো অদ্ভুত দাবি প্রমাণ করার দায় বক্তার এবং ' extra-ordinary claim requires extraordinary evidence'। আমি হঠাৎ দাবি করলাম আমি হাত নাড়ালে উড়তে পারি। আমার বন্ধু স্বাভাবিক ভাবেই এই কথাটি বিশ্বাস করলো না, সে আমায় বলল তুমি প্রমাণ কর যে তুমি উড়তে পারো। এর উত্তরে আমার তাকে উড়ে দেখানো উচিত, কিন্তু আমি তা না করে বললাম তুমি প্রমাণ করো তো আমি উড়তে পারি না। এই ধরনের পাল্টা প্রমাণের দায়িত্ব কোনো মতেই আপনার বন্ধুর নয়।
2) আপনার বন্ধু দাবি করলো যে তার বাড়িতে একটা ব্রহ্ম দৈত্য আছে। আপনি বললেন চল তোর বাড়ি গিয়ে দেখে আসি। বন্ধু আপনাকে তার বাড়ি নিয়ে গেলো এবং ঘরের একটি কোণ দেখিয়ে আপনাকে বললো "এই দ্যাখ ব্রহ্ম দৈত্য।" আপনি ব্রহ্ম দৈত্যকে দেখতে পেলেন না, বন্ধু কে বললেন ' কোথায়?' এই বার আপনার বন্ধু বললো, "একদম সরি রে, আমি তোকে বলতেই ভুলে গেছি যে ব্রহ্ম দৈত্য টা অদৃশ্য"। আপনি বললেন "আচ্ছা, তাহলে এক কাজ করি মেঝেতে কিছু পাউডার ছড়িয়ে দেই, তাহলে নিশ্চই ব্রহ্ম দৈত্যর পায়ের ছাপ দেখতে পাবো"। আপনার বন্ধু বললো "ওহ হো, এটাও বলতে ভুলে গেছি যে ব্রহ্ম দৈত্য টা শূন্যে ভাসে, ওর মাটিতে পা পরে না।" আপনি বললেন "বেশ ভালো কথা, তাহলে এক কাজ করি কিছু তরল রঙ ছিটিয়ে দেই, তাহলে ব্রহ্ম দৈত্যর শরীরের আউট লাইন টা দেখা যাবে কি বলিস"। বন্ধু বললো "ব্রহ্ম দৈত্য টা আসলে স্বচ্ছ, রঙ ছেটালে তার শরীর ও দেখা যাবে না।" আপনি বললেন "এক কাজ করি, একটা থার্মাল গগলস দিয়ে ব্রহ্ম দৈত্য কে দেখি"। শুনে আপনার বন্ধু বললো "ব্রহ্ম দৈত্যর শরীরে কোনো তাপ নেই"। আসলে 'ব্রহ্ম দৈত্যর অস্তিত্ব' একটি unfalsifiable দাবী। পৃথিবীতে এমন কোন পদ্ধতি নেই, যেই পদ্ধতিতে ব্রহ্ম দৈত্যর অস্তিত্ব কে disapprove করা যায়। বিখ্যাত বিজ্ঞানী কার্ল পুপার এর মতে unfalsifiable দাবি অপবিজ্ঞান হবার সম্ভাবনা প্রবল। পৃথিবীর সমস্ত বৈজ্ঞানিক দাবি কে মিথ্যে প্রমাণ করার একটি উপায় থাকে। যেমন 1919 সালে সূর্যগ্রহণের সময় তারাদের অবস্থান পরিবর্তিত না হলে আইনস্টাইন এর জেনারেল থিয়োরি ওফ রিলেটিভিটি মিথ্যে প্রমাণ হত। আপনি যদি লক্ষ্য করেন আপনার বন্ধুর দাবি unfalsifiable তাহলে অর্ধেক যুদ্ধ আপনি জিতে গেছেন। এই বার বন্ধু কে প্রশ্ন করুন " ব্রহ্ম দৈত্যটির আছে এবং নেই, এই দুটি ধারণার মধ্যে কি পর্যবেক্ষণগত ভাবে কি পার্থক্য আছে?" দেখবেন কোনো পার্থক্যই নেই। আপনার বন্ধু আসলে আপনাকে বলতে চাইছে পৃথিবীতে এমন কোন উপায় বা পদ্ধতি নেই যাতে ব্রহ্ম দৈত্যটির অস্তিত্ব কে disapprove করা যায়।
মনে রাখবেন pseudo science confirms but Science disapproves। এই পদ্ধতিতে আপনি বুঝতে পারবেন, ঈশ্বর, ভুত, কর্মফল, পুনর্জন্ম, স্বর্গ - মর্ত - পাতাল, আত্মা, জ্যোতিষ, আধ্যাত্মিকতা ইত্যাদি সকল কিছু unfalsifiable ক্লেইম।
Written by rourab
21th November Sunday 2021
Share
Write A Comment