গালৌতি কাবাব


ওয়াজিদ আলি শাহ। লখনৌর মসনদের এক আজব নবাব। ব্রিটিশরা যখন তাকে গ্রেফতার করতে মহলে ঢুকছেন। নবাব পালান নি। কারণ তাঁর জুতো পরিয়ে দেওয়ার লোক ইংরেজদের ভয়ে আগেই পালিয়েছে। সত্যিতো জুতো পরিয়ে দেবার লোক পালিয়ে গেলে নবাব নিজের হাতে জুতো পরে পালাবেনই বা কেমনে!

অবশেষে ব্রিটিশরা নিজের হাতে নবাবকে জুতো পরিয়ে ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন। এতেই নবাবের নৈতিক জয়।

এরপর নবাব কে ব্রিটিশরা পাঠিয়ে দেন কলকাতার মেটিয়াবুরুজ। তারপর ইতিহাস তৈরী হয়। কলকাতার আলু সহ বিরিয়ানি। কলকাতা হয়ে ওঠে মোঘলাই খানার পীঠস্থান। সারা ভারতে দুটি মেইন স্ট্রিম বিরিয়ানি, যথা আউধ বিরিয়ানি, হায়দরাবাদি বিরিয়ানি এর সাথে যুক্ত হয় কলকাতা বিরিয়ানি।


লখনৌ থাকাকালীন নবাব তার খানসামাদের খাবার নিয়ে অবাধ গবেষণার সুযোগ দ্যান। কিন্তু তার মন ভরে না। রাজ্যের গুরুতর চিন্তার বিষয় হয়ে ওঠে, কি করে কাবাব হয়ে উঠবে একদম তুলতুলে নরম। নবাব ডাকলেন এক প্রতিযোগিতা। লখনৌর বড় বড় খানসামা তৈরি করে আনলেন হরেক কিসম কাবাব।


হাজি মুরাদ আলী নামের এক ভদ্রলোক ছোট বেলায় ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে যান। এই দুর্ঘটনায় একটি হাত তার নষ্ট হয়ে যায়। মুরাদ আলী নবাবের এই কাবাব প্রতিযোগিতায় নবাবের জন্য বানিয়ে আনেন ১৬০ রকম মশলা দিয়ে তৈরি গালৌতি কাবাব। এই কাবাব খেয়ে নবাব আপ্লুত হন। মুরাদ আলী পুরুস্কার জেতেন। তিনশ বছর ধরে মুরাদ আলীর বংশধররা লখনৌর আমিনাবাদে এই গালৌতি কাবাবের ইতিহাস আজও বয়ে চলেছেন। প্রতিবন্ধী মুরাদ আলী কে বলা হত টুন্দে। প্রতিবন্ধী বা টুন্দে মুরাদ আলীর গালৌতি কাবাব আজ ও দেশের রসনায় বিরামহীন রসদ জুগিয়ে চলেছে।


ছবিতে বেগম মজেছে কাবাবে


Written by rourab

11th December Sunday 2022



   Share  

Write A Comment